Friday, January 9, 2009

রাজাকারের সন্তানের হাতে বিজয় দিবসের দিনে মাইক্রোফোন এবং কিছু কথা... এ জাতি মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে দ্যাখে।


ছবি-০১: ১৬ ডিসেম্বর ২০০৮ইং। নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার ডাকবাংলো শহীদ মিনার। রাত ১২:০১ মিনিট। শহীদ মিনারের পাদদেশে জুতা পায়ে এ প্রজন্মের একজন। এসেছে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে। এবার আপনিই বলুন...

ছবি-০২: ১৬ ডিসেম্বর ২০০৮ইং। বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থাপকের ভূমিকায় যাকে দেখছেন, তাকে দেখে নিন। তিনি আর দশটি মানুষের মতোই একজন মানুষ। তার কণ্ঠ থেকে অনবরত প্রকাশ পাচ্ছিল ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা, কিন্তু ৭১ এ তার পিতার ভূমিকা কি ছিল, তা কি আপনারা জানতে চান? স্বাধীনতার ৩৮তম বিজয় দিবসে আমরা দেখলাম, একজন রাজাকারের সন্তানের (রাজাকারের নাম সেকেন্দার মাস্টার) হাতে মাইক্রোফোন এবং প্রতি বছর স্বাধীনতা দিবসে, বিজয় দিবসে তার হাতে শোভা পায় মাইক্রোফোন। তিনি ভেবে নিয়েছিলেন, কারো হয়ত মনে নেই তার পিতার অপকর্মের কথা। রাজাকারেরা যে স্থানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার মুখে প্রসাব করেছিল, মৃত দেহটার উপর নির্যাতন চালিয়েছিল- সে স্থানের সামনেই প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবসের, বিজয় দিবসের মঞ্চ তৈরী করা হয়। ছবিতে যে মঞ্চ দেখছেন, ঠিক তার পিছনেই সে স্থান। দূরত্ব মাত্র ১৫ থেকে ২০ গজ। এবার আপনার মন্তব্য প্রকাশ করুন... (কিছু সময়ের জন্য দেশপ্রেমিক না হয়ে, আসুন আমরা প্রতিমুহূর্তের জন্য দেশপ্রেমিক হয়ে যাই)

ছবি-০৩: ১৬ ডিসেম্বর ২০০৮ইং। এবং সে স্থান থেকেই উম্মোচিত করা হলো মেসেজ ৭১ এর প্রথম সিডি। মোড়ক উম্মোচন করছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব এস. এম. ফেরদৌস (তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান) এবং তার পাশে দাঁড়িয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা)। এ সিডির একটা অংশে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম সরদার প্রকাশ করেছেন মহাদেবপুর উপজেলা সদরের কুখ্যাত রাজাকারদের নাম, তারা হলো- জিল্লু (গত পোস্টে ছবি প্রকাশ করা হয়েছে), সেকেন্দার মাস্টার, আছির মৌলবী, বাহা উদ্দীন, আহম্মদ দাফাদারসহ আরো অনেকে।

“এটা সত্য যে, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও সহযোগিতা ছাড়াই সহজ সরল উপস্থাপন দৃষ্টি আকর্ষণে ব্যর্থ। তেমনি সত্য, আমরা সত্যকে প্রকাশ করতে পিছ পা হতে শিখিনি। সামর্থ্য অনুযায়ী আপোষহীন চিত্তে এগিয়ে যাবার পথে বিতর্ক যেন না স্পর্শ করে, সে যুদ্ধে আমরা সক্রিয়। আমরা ধরে রাখতে চাই প্রকৃত যোদ্ধাদের। চাই প্রাপ্য সম্মানটুকু জানাতে। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে আগামী প্রজন্মদের সাথে নিয়ে পথ চলতে আমরা অঙ্গীকার বদ্ধ। প্রাপ্তি, অপ্রাপ্তির হিসেব কষে নয়। ভাগ্য পরিবর্তনের অভিলাসে নয়। কোন দল বা ব্যক্তির স্বার্থে নয়। এ প্রয়াস- দেশের স্বার্থে, প্রজন্মের স্বার্থে।”
বদলে দেবার এ সংগ্রামে সকলের অকুণ্ঠ সমর্থন আমাদের কাম্য।

Read more...

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আগে, পরে এবং কিছু কথা...


যারা ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধে স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান করেছিল, তাদের বিচার আমাদের কাম্য। আমরা যেমন চাই, তেমনি মুক্তিযোদ্ধারাও চান-যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হোক। যদিও এ বিচার কার্য পরিচালনা করা বর্তমান সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এ জন্য প্রতিটি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাকে এগিয়ে আসতে হবে। যদি বিচারকার্য পরিচালনায় স্বাক্ষী হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের বিচারকের সম্মুখে দাঁড়াতে হয়, সে মুহূর্তে মুক্তিযোদ্ধারা যেন তাঁদের স্বাক্ষ্য প্রদানে স্বচ্ছ থাকেন। যুদ্ধাপরাধীদের দ্বারা যে সকল পরিবার অপূরণীয় ক্ষতির সম্মূখীন হয়েছেন, তাঁদেরও এগিয়ে আসতে হবে, প্রকৃত সত্যকে প্রকাশ করতে হবে। স্বজনপ্রীতির কোন নজির আমরা দেখতে চাই না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্য সম্পূর্ণ করলেই যে সব কিছুর সমাধান হবে, তা নয়। যারা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য মুক্তিযোদ্ধা হয়েছিল কিন্তু লুটপাটে ব্যস্ত ছিল তাদেরও বিচারের সম্মূখীন করা উচিত। যারা রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত ছিল, পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকেছে, তাদেরও বিচার করতে হবে। যারা/ যে সকল মুক্তিযোদ্ধা/ ব্যক্তি স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিতর্কীত মুক্তিযোদ্ধা তৈরি করেছেন, তাদের বিচার আমরা দেখতে চাই। কারণ তাদের জন্যই আজ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিতর্কের চাদরে আবৃত। তাদের জন্যই বিপক্ষ শক্তি বিতর্ক জন্ম দেবার সাহস পেয়েছে।

যাদের বিচারের সম্মুখীন করা আবশ্যকঃ
০১. যারা চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী
০২. যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় নাম নেই, কিন্তু রাজাকার
০৩. ৭১ এ মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে যারা লুটপাটে সক্রিয় ছিল (কারণ তাদের দ্বারা এদেশের মানুষই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল)
০৪. স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যারা স্বার্থসিদ্ধির জন্য বিতর্কীত মুক্তিযোদ্ধার জন্ম দিয়েছে
০৫. স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যে সকল মুক্তিযোদ্ধা অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের নাম মুক্তিযোদ্ধা লিস্ট থেকে বাদ দিতে প্রভাবিত করেছে
০৬. পঙ্গু / অসহায়/ অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ অনুদানের টাকা যে সব মুক্তিযোদ্ধারা আত্মসাৎ করেছে
০৭. যে সকল মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধাপরাধী জেনেও তাদের পক্ষ নিয়েছে

যাদের বিচার আমাদের কাম্য নয়ঃ
০১. যারা মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করার জন্য এবং গ্রামের মানুষদের বাঁচানোর জন্য বাধ্য হয়ে রাজাকারের খাতায় নাম লিপিবদ্ধ করেছিল

এ প্রজন্মের আমরা যা চাইঃ
আমরা চাই প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হোক। চাই সকল প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের শুধরে নিয়ে এক পতাকা তলে অবস্থান করুন। যে সকল রাজনৈতিক দলে যুদ্ধাপরাধী আছে, তাদের বহিষ্কার করা হোক। বিচার কার্য পরিচালনায় প্রতিটি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা সত্যকে প্রকাশ করুক।

Read more...

About This Blog

About This Blog

  © amazing-soft.net 2008

Back to TOP